এ বিষয়ে যোগীরাজ তাঁহার দৈনন্দিন দিনলিপিতে স্বহস্তে লিখিয়াছেন — “কেবল রেচক ও পূরক আউর বঢ়াওএ সিদ্ধি দে — লাগে আউর সমাধ — রেচক পূরক বিনা জয়সে বন্ধাকূপ প্রাণ বায়ু কো বল লে আওএ মন নিশ্চল হোয় জায়। — আয়ুর বঢ়াওবে — রোগ ন রহে — পাপ জলাওএ নির্ম্মল করে — জ্ঞান হোয় তিমির নাশে।
অর্থাৎ প্রণায়ামে রেচক পূরক ও কুম্ভক এই তিনটি কর্ম আছে। যোগীরাজ বলিতেছেন আবশ্যকতা নাই এই রেচক ও পূরক আরো বাড়াও তাহা হইলেই প্রাণ স্থির হইয়া সমাধি আসিবে এবং সিদ্ধি পাইবে। স্বতন্ত্র কুম্ভকের আবশ্যকতা নাই। এই যে রেচক পূরক ব্যতীত যে প্রাণায়াম অর্থাৎ শ্বাসের গ্রহণ ও ত্যাগ ছাড়া যে প্রাণায়াম তাহা জলহীন কূপের ন্যায় বিফল। প্রাণ বায়ু কে বলপূর্বক টানা ও ফেলা এই কর্ম করিলেই মন নিশ্চল হইয়া যায়। উহা আরও বাড়াও তাহা হইলে রোগ থাকিবে না। জন্মজন্মান্তরের পাপ রাশি জ্বলিয়া-পুড়িয়া যাইবে, নির্মল হইবে, জ্ঞান হইবে ও অজ্ঞান চলিয়া যাইবে।
যোগীরাজ পৌত্র সত্যচরণ লাহিড়ী
দ্বারা সঙ্কলিত ও শ্রী অশোক কুমার চট্টোপাধ্যায় দ্বারা গ্রন্থিত পুরাণ পুরুষ যোগীরাজ শ্যামাচরণ লাহিড়ী নামক পুস্তকের দ্বিতীয় সংস্করণ হইতে গৃহীত।
ক্রিয়াযোগের প্রাণায়াম সংক্রান্ত বিষয় লইয়া লাহিড়ী বাবা বিভিন্ন পুস্তকে বা তাহার ২৬ টি ডাইরিতে যে সমস্ত কথা লিখিয়াছেন আমরা তাহা একত্রিত করিবার প্রচেষ্টা চালাইতেছি। যাহাতে ক্রিয়ান্বিতরা একই অধ্যায়ে বা একই স্থানে প্রাণায়াম সম্পর্কিত লাহিড়ী বাবার প্রায় সমস্ত লিখিত উপদেশাবলীর বিষয়গুলি সহজেই জানিতে পারেন।
যদিও বিষয়গুলি গুরুবক্ত্রগম্য এবং একমাত্র গুরুর কাছেই বুঝিয়া লইতে হইবে, তাই অক্রিয়ান্বিত ব্যক্তিরা ইহার কিছুই বুঝিতে পারিবেন না।