সাংখ্য যোগ, অর্থাৎ প্রাণায়াম করে স্হির হয়ে বসে থেকে ভাবনা নিরাকারে করে যে স্থিতি তাহাই ক্রিয়া।
প্রাণায়াম ক্রমশ বৃদ্ধি হইলে ক্রিয়ার পরে চিত্তে কোন প্রকার ভাবনার আকার থাকে না, অর্থাৎ তৎকালে নিশ্চিন্ত হইয়া চিত্ত স্থিতি পদ লাভ করে তাহাকেই শাঙ্খ যোগ বলে।
এইরূপ অবস্থায় থাকিবার অভ্যাস করিতে করিতে ফলাকাঙ্ক্ষা রহিত হইলে যোনি মুদ্রায় সমুদয় বিষয়ের দর্শন হয়। তাহা হইলে মনে কোন ইচ্ছার উদয় হইতে না হইতেই তাহার ত্যাগ হইয়া সমস্ত বাসনার নাশ হয়। এইরূপ অবস্থাতে অচিন্ত্যক-ব্রহ্ম রূপ-ধ্যানযোগ-রত বলা যায়।
সমুদায় গীতার ভাব এবং প্রাণায়াম সম্পর্কে লাহিড়ী মহাশয় লোক মারফৎ তার শিষ্য শ্রীযুক্তেশ্বর গিরি মহারাজকে বিস্তারে লিখে পাঠিয়েছিলেন। মূল লেখাটি যোগীরাজ শ্যামাচরণ লাহিড়ী ও পরম্পরা পুস্তকের লেখক শ্রী কল্যাণ সেনগুপ্ত মহাশয় এর কাছে সংরক্ষিত আছে বলিয়া শ্রী সেনগুপ্ত তাহার পুস্তকে লিখিয়াছেন। এই লেখাটি উক্ত পুস্তক হইতে গৃহীত।
ক্রিয়াযোগের মূল ভিত্তিস্তম্ভ হলো প্রাণায়াম এবং এই প্রাণায়ামের মাধ্যমে সাধকের মধ্যে সমস্ত রকম ঐশ্বরিক গুণাবলীর আবির্ভাব ঘটে। তাই বিশুদ্ধ ক্রিয়াযোগে বিশেষ কোন দেবদেবীর বা অন্য কিছুর কল্পনার (Visualisation) কোন স্থান নাই। ক্রিয়া যোগের অভ্যাসে দেহ ও মনের যে পরিবর্তন ঘটে তাহাতেই ক্রিয়ান্বিত দেহে আপনা আপনি ঈশ্বরানুভূতি সংঘটিত হয়।