যোগীরাজ তার ডাইরিতে লিখেছেন “তনমন বচন কর্ম্ম লাগাওএ — ইসিকো অহিংসা কহতে হয়”। — দেহ, মন, বচন ও কর্ম এই চারিটিকে একত্র করিলে অর্থাৎ স্থির করিলে যে অবস্থার উদয় হয় তাহাকে অহিংসা বলে। তিনি আরো লিখেছেন :
বচন = ব শব্দে কন্ঠ, চ শব্দে চক্ষু, ন শব্দে নাসিকা। নাসিকা দ্বারায় যে শ্বাস আসিতেছে তাহা কণ্ঠের দ্বারায় লক্ষ করিয়া বলা। কর্ম অর্থে প্রাণকর্ম্ম। এই প্রকার অহিংসা প্রাণ কর্ম সাপেক্ষ, তখন কায়মনোবাক্যে সকল কর্ম্মে হিংসার অভাব হওয়ায় অহিংসা।
যোগীরাজ পৌত্র সত্যচরণ লাহিড়ী
দ্বারা সঙ্কলিত ও শ্রী অশোক কুমার চট্টোপাধ্যায় দ্বারা গ্রন্থিত পুরাণ পুরুষ যোগীরাজ শ্যামাচরণ লাহিড়ী নামক পুস্তকের দ্বিতীয় সংস্করণ হইতে গৃহীত।
দেখা যাচ্ছে অহিংসা নামক মানবিক বৃত্তিটি ক্রিয়াযোগের অন্তর্মুখীন প্রাণকর্ম্ম বা প্রাণায়ামের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল। অন্য কোনভাবেই প্রকৃত অহিংস হওয়া সম্ভব নয়। বাহ্যিকভাবে অহিংসার নামে যা কিছু করা হয় আধ্যাত্মিকতার নিরিখে তা’ প্রায় মূল্যহীন। পরম করুণাময় যোগীরাজ বচন শব্দের যৌগিক ব্যাখ্যা করতে যে’য়ে ক্রিয়া যোগের অন্তরমুখী প্রাণায়ামের ব্যবহারিক কৌশলও ক্রিয়ান্বিতদের জন্য ব্যক্ত করেছেন।
*উল্লেখ্য যে যোগীরাজ শ্যামাচরণ লাহিড়ী তার আধ্যাত্মিক ক্রিয়াকর্ম এবং অনুভূতি সমূহ ২৬ টি ডায়েরির মধ্যে লিখে রেখে গেছেন।